তাসকিনের ছেলের তার বাবার কাছে প্রশ্ন



তাসকিনের ছেলে যখন বড় হবে তার জন্মদিনে তার বাবার করা পোষ্টের কমেন্ট পড়ে সে নিশ্চয় তার বাবাকে জিজ্ঞেস করবে আচ্ছা বাবা মা আর তোমার বিয়ে কবে হয়েছিলো ? আমি তো তোমাদের বিয়ের পরের সন্তান তাই না বাবা ? 

আমরা জাতি হিসেবে প্রচন্ড ভদ্র,সুশীল এবং চিন্তাবিদ। তাই আমাদের ঘরের চিন্তা বাদ দিয়ে সাকিব আল হাসানের বউ কেন বোরকা পড়ে না তা নিয়ে যত মাথা ব্যাথা । 

আল্লাহ তা'আলা আপনাকে প্রশ্ন করবে আপনার মা,বউ,বোন পর্দা করেছে কি করেনি তা নিয়ে। সাকিবের বউ নিয়ে না।  গতকাল Taskin Ahmed এর ছেলে জন্ম নিয়েছে । তার সদ্য জন্ম নেয়া ছোট বাচ্চাটা কেমন আছে , বাচ্চার মা কেমন আছে তা নিয়ে ভাব্বার আগে আমরা ক্যালকুলেটর নিয়ে আগে হিসাব-নিকাশে বসে পড়েছি তাসকিনের বাচ্চার বার্থডে মাইনাস বিয়ের ডেট ইকুয়েল্টু অর লেস দেন দশ মাস দশ দিন কিনা !
আর তাই তাসকিন বাধ্য হলো কমেন্ট করতে যে "না ভাই দেখেন ট্রাষ্ট মি আমার বাচ্চা আসলেই বিয়ের দশ মাস সাতাশ দিন পর জন্মেছে" ।

আজকাল আমরা আমাদের সময় আর চিন্তাশক্তিকে কোন মানুষকে ছোট করতে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করি ।
কোন ক্রিয়েটিভ কাজ করতে ব্যয় করিনা। সুলেমান সুখন ভাইয়া ক্যামব্রিজে ইনভাইটেশন পেয়েছেন একজন পপুলার শিক্ষক থেকে । আমরা আমাদের সময় নষ্ট করে ক্যামব্রিজের আসল Logo নাকি লাগিয়ে দেয়া হয়েছে এর পিছনের সব সময় ব্যয় করে ফেলেছি ।
যে সময়টাতে হয়তো একটা ভালো বই পড়া যেত। একটা ভালো কাজ করা যেত।

আমরা Logo টা যে অর্জিনাল না তা ভাইরাল করেছি ঠিকই কিন্তু ইনভাইটেশন যে আসলেই ক্যামব্রিজের শিক্ষক থেকে এসেছে তা জানার পর আর ভাইরাল করিনি ।
কারণ তিনি আসলেই যে ইনভাইটেশন পেয়েছেন এই ইস্যু নিয়ে আমাদের আর মাথা ব্যাথা নেই । এই ইস্যু জাতি খাবে না ।
কারণ আমরা তো কিউট জাতি ।

Ayman Sadiq "নিরাপদ সড়ক চাই" আন্দোলনে কতদিন পর আসলোবতা আমরা সবাই মনে রেখে দিলাম । কিন্তু আজ এতোদন পর সবার কভার ফটো বদলে গেছে । আয়মান ভাইয়ার কভারটা যে আজো নিরাপদ সড়ক চাই এর চিহ্ন হিসেবে দুইজন শিক্ষার্থীর ছবি রয়ে গেছে তা আর কেউ দেখতে চাইলো না ।

একটা ছোট্ট গল্প দিয়ে শেষ করি ।
একটা ছোট ছেলে তার করা আর্টে লিখলো "আমার আর্টে যত ভুল পড়বে ততটি দাগ দিবে" আর সে সেটাকে তার স্কুলের বারান্দায় টাঙিয়ে দিল । ছুটির পর দেখা গেল ছবিটি দাগ দিয়ে ভর্তি । সবাই ভুল ধরিয়ে দিয়েছে ।
পরদিন সে ঠিক একই ছবি টাঙিয়ে দিলো এটা লিখে "যতটা ভুল আছে তাকে কলম দিয়ে শুদ্ধ করে দিন" । আর ছুটির পর সে অবাক হয়ে দেখতে পেল আজ আর একটা কলমের দাগও তার ছবিটির মধ্যে পড়ে নি ।
-
আমরা মানুষ হিসেবে সবসময় মানুষের দিকে আঙুল দেখিয়ে দিতে কিংবা মানুষের ভুল ধরিয়ে দিতে প্রস্তুত থাকি। কিন্তু কখনো সে ভুলকে শুধরে দিতে কিংবা নিজের মধ্যে থাকা একই ভুলকে শুধরাতে পারিনা শুধরাতে চাই না ।অন্যের দিকে এক আঙুল তাক করার পর যে বাকি চারটা আঙুল আমার দিকে তাক করে আছে তা আমরা কখনোই বুঝতে চাই না । 



- HUSSAIN RIFAT


#HussainRifat

No comments:

Post a Comment